আড়াইশো বছরের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো এশিয়াটিক সোসাইটির পরিচালন কমিটি ও কর্মীদের দ্বন্দ্বের পরিস্থিতিতে প্রশাসক বসাল কেন্দ্রীয় সরকার। সংস্কৃতি মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লিলি পাণ্ডে এক নির্দেশিকায় জানিয়েছেন, সোসাইটির নানা কাজকর্ম যথাযথ ও মসৃণ ভাবে পরিচালনার জন্যে লেফটেন্যান্ট কর্নেল অনন্ত সিনহা আপাতত প্রশাসকের কাজ চালাবেন। তিনি বর্তমানে সোসাইটির ডিরেক্টর।
লিলির বিজ্ঞপ্তিতে কাঠগড়ায় তোলা হয়েছে সোসাইটির পূর্বতন সভাপতি স্বপন প্রামাণিকের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে। তাতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ লঙ্ঘন করে সোসাইটির পরিচালন কর্তৃপক্ষ বার বার কর্মচারীদের বোনাস ও এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ডে (ইপিএফ) অতিরিক্ত বরাদ্দ করেছেন।
যা নিয়ে সংসদীয় পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিও (প্যাক) নানা সময়ে অনিয়মের প্রশ্ন তুলেছে। এমনকী ১৯৮৪ সালের এশিয়াটিক সোসাইটি আইন অনুযায়ী ২০১৫ ও ২০২০ সালে কেন্দ্রের তরফে সংস্কৃতি মন্ত্রক যে নির্দেশিকা পাঠিয়েছিল, তাও মানেনি সোসাইটির পরিচালন সমিতি।
মন্ত্রকের যুগ্মসচিবের দু’টি অভিযোগ কার্যত স্বীকারও করে নিয়েছেন সোসাইটির পূবর্তন সভাপতি। স্বপন শনিবার বলেন, ‘কর্মচারীদের বোনাস ও ইপিএফ নিয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তার সত্যতা তো রয়েইছে। মন্ত্রকের নির্দেশ মেনে আমরা কর্মচারীদের বোনাস ও ইপিএফ বাবাদ অতিরিক্ত অর্থ দিতে চায়নি। কিন্তু কর্মচারীদের ঘেরাও-আন্দোলনের জেরে দিতে বাধ্য হয়েছি।’
তাঁর সংযোজন, ‘কর্মচারীরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে বোনাস এবং ইপিএফ-এর বিষয়ে নিজেদের পক্ষে রায় বা স্থগিতাদেশ নিয়ে এসেছিল। ফলে আমাদের পক্ষে খুব বেশি কিছু করার ছিল না।’
সোসাইটিতে প্রশাসক বসানো ও পূবর্তন পরিচালন কমিটিকে কাঠগড়ায় তোলা প্রসঙ্গে এশিয়াটিক সোসাইটি এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষের দাবি, ‘আমাদের বোনাস দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। আদালত ২০২৩ সালে এশিয়াটিক সোসাইটির কর্মচারীদের কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মীদের সমতুল্য গণ্য করে বোনাস দেওয়ার রায় দিয়েছিল। আর ইপিএফ দেওয়ার বিষয়টি এখনও হাইকোর্টে বিচারাধীন। ৩ সেপ্টেম্বর শুনানির কথা। আদালতই নির্দেশ দিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কর্মীদের নিয়মিত ইপিএফ-এর টাকা জমা দিতে হবে।’
উল্লেখ্য, চলতি বছর মার্চে এশিয়াটিক সোসাইটির কমিটি গঠনের নির্বাচনের মাঝ পর্বে তা স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছিল সংস্কৃতি মন্ত্রক। তার আগেই অবশ্য কমিটির সিংহভাগ পদাধিকারী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কর্মচারীদের অবসরের বয়স, পেনশন এবং বোনাস নিয়ে লাগাতর আন্দোলনে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে পদত্যাগে বাধ্য হন সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি, ট্রেজারার-সহ বিভিন্ন পদাধিকারী ও কাউন্সিল সদস্যরা।
সভাপতি হিসাবে স্বপন সেই সব পদত্যাগপত্র মন্ত্রকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন। সব সদস্যের কাছে খোলা চিঠিতে অভিযোগ করেছিলেন, কর্মচারীদের ‘হিংসাত্মক’ আন্দোলনের জেরেই কাউন্সিল সদস্য ও বিভিন্ন পদাধিকারী পদত্যাগ করেছেন। তিনি নিজেও পদত্যাগে ইচ্ছুক বলে জানিয়েছিলেন।
Overall, the situation at the Asian Society seems to be tense with conflicts between the management committee and the employees. The allegations of irregularities in bonus payments and EPF contributions have raised concerns among various stakeholders. It is important for all parties involved to address these issues transparently and work towards a resolution that is fair and just for everyone. The involvement of government authorities and legal proceedings indicate the seriousness of the situation, and it is crucial for all parties to cooperate and find a mutually beneficial solution.