কৌশিক প্রধান, রিয়েল এস্টেট বিক্রির ক্ষেত্রে লং টার্ম ক্যাপিটাল গেনস (এলটিসিজি) কর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপাবে না বলে বুধবার লোকসভায় অর্থবিল আলোচনার সময় জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। অর্থবিলে নতুন সংশোধনী নিয়ে এ দিন লোকসভায় আলোচনা করছিলেন নির্মলা।
নতুন সংশোধনী অনুযায়ী, চলতি বছরের 23 জুলাইয়ের আগে সম্পত্তি কিনলে করদাতাকে ইনডেক্সেশন ছাড়া 12.5 শতাংশ এলটিসিজি এবং ইনডেক্সেশন-সহ 20 শতাংশ এলটিসিজি-র মধ্যে যে কোনও একটি বাছতে হবে। এর ফলে করদাতাকে কোনও বাড়তি করের বোঝা বইতে হবে না বলেই দাবি নির্মলার।
গত ২৩ জুলাই সংসদে পেশ করা বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন সম্পত্তিতে এলটিসিজি কর 20% থেকে কমিয়ে 12.5% করার প্রস্তাব রেখেছিলেন। তবে করের হার কমালেও তিনি ইনডেক্সেশনের সুবিধা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
তার পর বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে এ নিয়ে বিতর্ক ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। আশঙ্কা তৈরি হয় যে ইনডেক্সেশনের সুবিধা চলে গেলে আবাসন বিক্রির সময় বিক্রেতারা মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে হিসেব করে তাঁদের কেনার আসল দাম অ্যাডজাস্ট করার সুবিধা পাবেন না।
এর ফলে, তাঁদের এখনকার থেকে বেশি টাকা কর দিতে হবে। রিয়েল এস্টেট মহলের সঙ্গে যুক্ত প্রতিনিধিরাও বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য সরকারের কাছে আর্জি জানান। তারই প্রেক্ষিতে কেন্দ্র আবাসন মালিকদের জন্য এলটিসিজি করের পুরনো ও নতুন— দুটি হারই চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও লগ্নি বাড়বে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞমহল। হীরানন্দানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান নিরঞ্জন হীরানন্দানি বলেন, ‘করভার কমাতে পুরনো ও নতুন স্কিমের মধ্যে যে কোনও একটা বেছে নিতে পারবেন করদাতারা। কেন্দ্রের আনা এই সংশোধনীর ফলে আবাসন ক্ষেত্রে লগ্নি ও বিক্রি, দুটোই বাড়বে।’
সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্ক ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর শিশির বাইজাল জানিয়েছেন, আপাত দৃষ্টিতে 12.5% হার আকর্ষণীয় মনে হলেও 12.5% না ইনডেক্সেশনের সুবিধা-সহ 20% হারের সুবিধা নেওয়া উচিত, তা ব্যক্তি নির্বিশেষে এবং অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বিবেচনা করতে হবে।
তাঁর সংযোজন, ‘আগে কেনা সম্পত্তির এখন বাজার মূল্য যদি মূল্যবৃদ্ধির হারকে টপকে যায়, তা হলে 12.5% হারের সুযোগ নেওয়া হয়তো ভালো হবে। তবে যেখানে সম্পত্তির বাজার মূল্য বাড়াটা মূল্যবৃদ্ধির হারের কাছাকাছি হয়, তা হলে ইনডেক্সেশনের সুবিধা-সহ 20% হারের সুযোগ নেওয়াটা আকর্ষণীয় হতে পারে।’
সম্পত্তি উপদেষ্টা সংস্থা অ্যানারকের চেয়ারম্যান অনুজ পুরীর মতে, দীর্ঘ দিন রাখার পর কোনও ব্যক্তি যদি সম্পত্তি বিক্রি করেন, তা হলে তাঁর ইনডেক্সেশনের সুবিধা-সহ 20% হারের সুযোগ নেওয়া উচিত। অন্য দিকে, কেনার অল্প সময়ের মধ্যে সম্পত্তি বিক্রি করলে ইনডেক্সেশন ছাড়া 12.5% হারের সুযোগ নিলে মোট কর কম দিতে হবে।
অ্যানারকের হিসেবে এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ভারতের প্রধান সাতটি শহরে ফ্ল্যাট বিক্রির হার কিছুটা কমেছে। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্তে আবাসন বিক্রি ফের গতি পাবে বলে তাদের আশা।
এই সংবাদটি দেখে বুধবার লোকসভায় অর্থবিল আলোচনার সময় জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এই সংবাদটি দেখে রিয়েল এস্টেট বিক্রির ক্ষেত্রে লং টার্ম ক্যাপিটাল গেনস (এলটিসিজি) কর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপাবে না।